মাতৃত্বকালীন ভাতা কত টাকা ২০২৪

অনেক দরিদ্র পরিবার আছে তাদের ঠিকভাবে সংসার চালাতে কষ্ট হয়। দরিদ্র-অসহায় ফ্যামিলিতে কোন গর্ভধারিত মা থাকলে তাদেরকে ভরণ পোষণ করতে অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু টাকার অভাবে সেই গর্ভধারিত মা পুষ্টিকর খাবার খেতে পারে না। এবং কি সন্তান জন্ম দেওয়ার পর সঠিকভাবে ভরণ পোষণ এবং পুষ্টিকর খাবার দিতে পারেনা। এ কারণে অনেক শিশু আছে তাদের বিভিন্ন পুষ্টিহীন রোগ হয়ে থাকে। এবং কিছু শিশু পুষ্টিহীনতার কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়ে যায়। 

এইজন্য বাংলাদেশ সরকার দরিদ্র অসহায় ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়িয়েছে। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কতৃক গর্ভধারিত মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা চালু করেছে। আপনি মাতৃত্বকালীন ভাতা পেলে খুব সহজেই আপনার শিশুর পুষ্টিকর খাবার এবং সঠিকভাবে লালন পালন করতে পারবেন। একটি শিশুর ৪ বছর পর্যন্ত ভালো পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো উচিত। এবং গর্ভধারিত মায়ের জন্যও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার। তাহলে জেনে নিন প্রতি মাসে সরকার মাতৃত্বকালীন ভাতা কত টাকা প্রদান করে।

মাতৃত্বকালীন ভাতা কত টাকা

কোন অসহায় ব্যক্তির ফ্যামিলিতে যদি কেউ গর্ভধারণ করে, তাহলে সরকারি মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গর্ভধারিত মায়েদের জন্য জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা প্রদান করেছেন। কিন্তু মাতৃত্বকালীন ভাতা আবেদন করার জন্য আপনাকে কিছু শর্ত মানতে হবে। আপনি অনলাইনের মাধ্যমেই মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে মাতৃত্বকালীনভাতা কত টাকা প্রদান করে। আপনার আবেদন যদি সঠিকভাবে সম্পূর্ণ হয় তাহলে কয়েকটি ধাপে ধাপে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে আপনার কাছে মাতৃত্বকালীন এর ভাতা পৌঁছে দিবে সরকার। মাতৃত্বকালীন ভাতা মাসিক ভাবে টাকা ধরা হলেও ছয় মাস পর পর এই টাকা প্রদান করে। প্রতি মাসে ৮০০ টাকা করে মাতৃত্বকালীন ভাতা দেয়। এবং ৬ মাস পর আপনি মোট ৪,৮০০ টাকা পাবেন। এভাবে আপনি ২৪ মাস অর্থাৎ দুই বছর পর্যন্ত ৪টি ধাপে ভাতা পাবেন। এবং দুটি সন্তানের জন্য আপনাকে ৩৬ মাস অর্থাৎ তিন বছর আপনাকে মাতৃত্বকালীন ভাতা দিবে সরকার।

শিশু ভাতা কত টাকা ২০২৪

সর্বপ্রথম ২০০৭-৮ সালে বাংলাদেশ মা ও শিশুর ভাতা চালু হয়। অনেক দরিদ্র অসহায় ফ্যামিলির গর্ভধারিত না থাকে তারা তাদের গর্ভধারণের সময় পুষ্টিকর খাবার খেতে পারে না। এবং শিশুকেও পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে পারে না। এ কারণে অনেক শিশু আছে তারা মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়ে যায়। এই অসহায় ব্যক্তিদের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ সরকার মাতৃত্বকালীন ভাতা অনুমোদন করে দিয়েছে।

আপনার গ্রামের ইউনিয়ন অফিস থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে শিশু বা তার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আপনার আবেদনের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে আপনাকে ২৪ মাস পর্যন্ত শিশু বাচ্চা প্রদান করবেন। এবং প্রতি মাসে ৮০০ টাকা করে ছয় মাস পর পর ৪৮০০ টাকা পেয়ে যাবেন। এভাবে ২৪ মাস পর্যন্ত আপনার শিশু ভাতার কার্যক্রম চালু থাকবে।

দরিদ্র মা’র জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান কর্মসূচি

সরকারি মাতৃত্বকালীন বাজেট অনুযায়ী সোনালী ব্যাংকে টাকা দেওয়া হয়। মহিলা বিষয় অধিদপ্তর কর্তৃক কর্মকর্তাদের স্বাক্ষরের পর সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রত্যেকটা মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রাপ্ত দের মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে পৌঁছে দেয়। প্রতি একজন দরিদ্র মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রাপ্তদেরকে প্রতিমাসে ৮০০ টাকা করে ২৪ মাস পর্যন্ত প্রদান করে থাকেন। 

মাতৃত্বকালীন ভাতা অনলাইন আবেদন

অনলাইনের মাধ্যমে ফরম সংগ্রহ করে খুব সহজে মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য আবেদন করা যায়। এজন্য আপনাকে প্রথমে গুগল ক্রোমে প্রবেশ করে মাতৃত্বকালীন ভাতা লিখে সার্চ করতে হবে। এরপর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন। সে ওয়েব সাইটে প্রবেশ করে ফরম সংগ্রহ করে সম্পূর্ণ সঠিক তথ্য দিয়ে এরপর আপনাকে ফরমের খালিঘরগুলো পূরণ করতে হবে। পূরণ করা হয়ে গেলে আপনি ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদে জমা দিতে পারবেন। এরপর সরকারি কার্যক্রম অনুযায়ী আপনার তথ্যগুলো যাচাই বাছাই করে যদি সঠিক হয় তাহলে আপনি মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য অনুমোদন পাবেন।

মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়ার নিয়ম

অসহায় গর্ভবতী নারীদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে। আপনি আমাদের দেওয়া নিয়মগুলো মানলে মাতৃত্বকালীন ভাতা আবেদন অনেকটাই সহজ ভাবে করতে পারবেন। আপনার গর্ভবতীর মেডিকেল রিপোর্ট প্রমাণপত্র হিসাবে প্রদান করতে হবে। অনলাইন থেকে ফরম সংগ্রহ করার পর অবশ্যই সঠিক নিয়মে পূরণ করে ফরমের সাথে প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এগুলো নিয়ম ফলো করলেই অতি দ্রুত মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়া সম্ভব।

মাতৃত্বকালীন ভাতা আবেদন করতে কত টাকা লাগে

অনলাইনের মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন আবেদনের জন্য কোন টাকা খরচ হয় না। সম্পূর্ণ ফ্রিতেই আপনি মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু ইউনিয়ন অফিস থেকে আবেদন করতে গেলে আপনার অল্প কিছু টাকা খরচ হতে পারে। কারণ ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করতে ৪০ টাকা ফি প্রদান করতে হয়।

মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রাপ্তির জন্য কাগজপত্র

অসহায়-দরিদ্র গর্ভধারিত মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা আবেদন করতে অবশ্যই কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এই কাগজপত্র গুলো জমা না দিলে আপনি আবদেন সম্পূর্ণ হবে না।

  • সরকারি অনুমোদিত কোন হাসপাতাল থেকে গর্ভধারণের মেডিকেল রিপোর্ট কপি। 
  • আপনার এন আইডি কার্ডের ফটোকপি। 
  • পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি। 
  •  আপনার মোবাইল ব্যাংকিং এর সচল নাম্বার।

মাতৃত্বকালীন ভাতা ভোগী হওয়ার শর্তাবলী

কেউ যদি মাতৃত্বকালীন ভাতা ভোগী হওয়ার জন্য আবেদন করতে চায় তাহলে অবশ্যই কিছু শর্তাবলী মেনে আবেদন করতে হবে। কারণ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মাতৃত্বকালীন ভাতা আবেদন করার পূর্বে এ শর্তগুলো আপনাকে মানতে হবে। এ শর্তগুলো ঠিক রেখে আবেদন করতে পারলে আপনার আবেদন সম্পূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। সত্যতা যাচাই করার পরেই আবেদন এর কাজ সম্পন্ন করবে। 

  1. বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছর হতে হবে। 
  2. প্রথম বা দ্বিতীয় গর্ভধারিত হতে হবে। 
  3. মোট ১৫০০ টাকার নিম্নে মাসিক আয় থাকতে হবে। 
  4. দারিদ্র প্রতিবন্ধী মা অগ্রাধিকার পাবে। 
  5. এবং ভাতা ভোগী অবশ্যই গর্ভধারণ পাঁচ মাস বয়স হতে হবে। 
  6. কোন জায়গায় বসবাস করে অথবা বসতবাড়ি রয়েছে এরকম ভাতা ভোগী হতে হবে।

শেষ কথা

আপনারা যারা অসহায় দরিদ্র গর্ভবতী মাতৃত্বকালীন ভাতা জন্য আবেদন করতে চাচ্ছেন। এবং গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার কত টাকা ভাতা প্রদান করে সেইটা জানার আগ্রহ থাকে। আশা করি আপনি আমাদের সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে মাতৃত্বকালীন ভাতা কত টাকা দেয় জানতে পেরেছেন। আপনি যদি আমাদের এই পোষ্টটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার আশেপাশের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদের কে দেখার সুযোগ করে দিন। ধন্যবাদ

Leave a Comment