প্রত্যেকটা মানুষের শরীরে বিভিন্ন রকম রোগ রয়েছে। বিভিন্ন কারণে শরীরে রোগ হয়ে থাকে। সব সময় আমাদের শরীরের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। অনেকেই আছে মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খায়। অনেক সময় মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি তারা প্রথমত এই ডায়াবেটিস রোগের কোন লক্ষণ বুঝতে পারে না। এজন্য প্রত্যেকটা মানুষের কিছুদিন পরপর ডায়াবেটিস চেক করা উচিত।
ডায়াবেটিস চেক করতে হলে আপনাকে অবশ্যই মেশিনের মাধ্যমে চেক করতে হবে। কোন ডাক্তারের দোকানে গেলে আপনার হাতে থেকে এক সামান্য পরিমাণ একটু রক্ত নিয়ে স্ট্রিপ দিয়ে তারা মেশিনের সাহায্যে আপনার ডায়াবেটিস চেক করবে। এই মেশিন থাকলে আপনি নিজে নিজেই ডায়াবেটিস চেক করতে পারবেন। কিছু মানুষ আছে একেবারে ডায়াবেটিস মেশিন কিনে বাড়িতে নিজে নিজেই ডায়াবেটিস চেক করতে চায়। কিন্তু সবাই ডায়াবেটিস চেক করার মেশিনের দাম জানে না। আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে ডায়াবেটিস মাপার মেশিনের দাম কত জেনে নিন
ডায়াবেটিস মাপার মেশিনের দাম কত
কয়েকটি কোয়ালিটি ডায়াবেটিস মাপার মেশিন পাওয়া যায়। আপনার পছন্দ অনুযায়ী কোন দাম থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ মানে ডায়াবেটিস মাপার মেশিন কিনতে পারবেন। আমাদের শরীর ঠিক রাখার জন্য কয়েকদিন পর পর ডাইবেটিস চেক করা উচিত। নিজে নিজেই ডায়াবেটিস চেক করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই ডায়াবেটিস মাপার মেশিন কিনতে হবে।
অনেক সময় বিভিন্ন জায়গায় ডায়াবেটিস মাপার মেলা করে থাকে। সেখানে থেকে ফিরিতে ডায়াবেটিস চেক করা যায়। অথবা সেই মেলা থেকে ডিসকাউন্টে একেবারে কম দামের মধ্যে ডায়াবেটিস মাপার মেশিন কেনা যায়। কারণ প্রতিনিয়ত ডাক্তারের কাছে গিয়ে ডায়াবেটিস চেক করতে গেলে আপনার খরচ অনেকটাই বেশি পড়বে। এজন্য নিজেই কিনতে চাইলে বর্তমান বাজার অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৮৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩,৫০০ টাকা দিয়ে ডায়াবেটিস মেশিন কেনা সম্ভব। এবং আরো উন্নত মানের মেশিন কিনতে চাইলে আরো বেশি টাকা খরচ করতে হবে।
ডায়াবেটিস মেশিনের স্ট্রিপ
কেউ যদি ডাইবেটিস চেক করতে চায় তাহলে অবশ্যই স্ট্রিপে সামান্য পরিমাণ রক্ত দিয়ে মেশিনের সাহায্যে ডাইবেটিস চেক করতে হবে। কারণ স্ট্রিপ ছাড়া আপনি কখনো ডায়াবেটিস চেক করতে পারবেন না। প্রথমে আপনার হাতের আঙ্গুলে বিশুদ্ধ শুই এর মাধ্যমে সামান্য পরিমাণ রক্ত নিতে হবে। স্ট্রিপে সঠিকভাবে রক্ত প্রদান করার পর আপনাকে ডায়াবেটিস মেশিনে স্টেপ প্রদান করতে হবে। এরপর আপনার কত পয়েন্ট ডায়াবেটিস আছে সেই মেশিনের ডিসপ্লে তে দেখা যাবে। এভাবে ডায়াবেটিস মেশিনের স্টেপের সাহায্যে সহজেই ডায়াবেটিকস চেক করা যায়।
ডায়াবেটিস স্ট্রিপ এর দাম
অনেকেই ডাইবেটিক স্ট্রিপ এর মূল্য খুঁজে থাকে। কারণ মেশিন কেনার পর কিছুদিন ডায়াবেটিক্স চেক করলে স্ট্রিপ শেষ হয়ে যায়। তখন আমাদের নতুন করে আবার স্ট্রিপ কেনার প্রয়োজন পড়ে। কারণ স্ট্রিপ ছাড়া কখনো ডায়াবেটিস চেক করা যায় না। যেকোনো ডাক্তারের দোকান থেকে অথবা অনলাইনে দারাজ থেকেও আপনি ডায়াবেটিস স্ট্রিপ সংগ্রহ করতে পারবেন। ২৫ পিসের স্ট্রিপ কিনতে আপনার খরচ পড়বে ৪০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা। এবং ৫০ পিস এর ডাইবেটিস স্ট্রিপ কিনতে চাইলে বাজেট রাখতে হবে ৯০০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকা।
ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্রের নাম কি
কয়েকটি কোম্পানি ডায়াবেটিকস মাপার যন্ত্র পাওয়া যায়। বিভিন্ন কোম্পানির ভিন্ন ভিন্ন নাম দিয়ে ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র তৈরি করেছে। এরমধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্রের নাম হলো গ্লুকো মিটার। কারণ গ্লুকো মিটার বললেই যে কোন কোম্পানির ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র পেয়ে যাবেন। আপনাদের সুবিধার্থে এই পোস্টের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানি ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্রের নাম ও মডেল সহ প্রত্যেকটার দাম উল্লেখ করে দিয়েছি। এর নিচে লেখাগুলো পড়লে সহজেই বিভিন্ন কোম্পানির ডায়াবেটিক মাপার যন্ত্রের নাম জানতে পারবেন।
ডায়াবেটিস মেশিন কেনাকাটা
আমাদের শরীরের ডায়াবেটিস ঠিক আছে কিনা পরীক্ষা করার জন্য অবশ্যই গ্লুকোমিটার এর সাহায্য পরিক্ষা করতে হবে। এইজন্য যাদের শরীরে সুগারের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদেরকে অবশ্যই ডায়াবেটিস মেশিনের সব সময় ঘরে রাখা উচিত। প্রয়োজন পড়লে প্রতিদিনই দুই থেকে তিনবার ডায়াবেটিস মেশিন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য চেক করবেন। এই জন্য আপনাকে কয়েকটি নিয়ম ফলো করতে হবে। প্রথমে আপনি ম্যানুয়ালি ভাবে ডাইবেটিস পরীক্ষা করতে হবে। এবং স্ট্রিপ এ সর্বনিম্ন ১ মাইক্রো লিটারের চেয়েও কম রক্ত ব্যবহার করতে হবে। তারপর ডায়াবেটিস পরীক্ষা করার আগে প্রতিটি স্ট্রিপ কোডিং ইনপুট দিয়ে ব্যবহার করলে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের সেরা ডায়াবেটিস মেশিন এর মূল্য তালিকা ২০২৪
বাংলাদেশে অনেকগুলো ডায়াবেটিস মেশিন তৈরি করার কোম্পানি রয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন কম্পানির মেশিনের আলাদা আলাদা দাম হয়ে থাকে। দেখে নিন বাংলাদেশের সেরা ডায়বেটিস মেশিনের মূল্য তালিকাঃ
ক্রমিক নং | ডায়াবেটিস মেশিনের নাম ও মডেল | দাম |
০১ | Bionime Rightest GM700SB Bluetooth Diabetes Machine | ৮৫০ টাকা |
০২ | Accu-Chek Performa Blood Glucose Meter | ১,২৫০ টাকা |
০৩ | Sinocare Safe AQ Diabetes Test Machine | ১,৩৬৯ টাকা |
০৪ | Accu-Chek Active 50 Pieces Test Strip | ১,৪৯৯ টাকা |
০৫ | Getwell Fast Blood Sugar Check | ১,৭৫০ টাকা |
০৬ | Care Chek Diabetes Glucometer | ১,৮৫০ টাকা |
০৭ | Accu-Chek Active Blood Glucose Monitor | ৩,৫০০ টাকা |
ডায়াবেটিস মাপার মেশিনের ব্যবহার
গ্লুকোমিটার কিনে আনার পর অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে ব্যবহার করতে হবে। কারণ সঠিকভাবে যদি সকল কার্যকর না করেন তাহলে আপনার ডায়াবেটিস চেক করার ফলাফল ভুল আসতে পারে। কিছু কিছু কোম্পানির আলাদা আলাদা গ্লুকোমিটার রয়েছে। সব গ্লুকো মিটারের ব্যবহারই একরকম না। দেখে নিন কিভাবে ব্যবহার করতে হবে।
- অবশ্যই আপনাকে কোন জীবাণুনাশক অথবা সাবান দিয়ে ভালো করে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
- এরপর আপনাকে ডায়াবেটিস মেশিনের একটি স্ট্রিপ নিতে হবে। এরপর আপনার আঙ্গুল থেকে বিশুদ্ধ সুই দিয়ে ফোড়া করে ১ মাইক্রো লিটারের কম রক্ত সংগ্রহ করতে হবে। এরপর যদি আপনার আধুনিক ডায়াবেটিস মেশিন হয় তাহলে ডায়াবেটিক্স মেশিনের স্ট্রিপ প্রবেশ করার পর একটু অপেক্ষা করলে আপনার ফলাফল চলে আসবে।
- হঠাৎ করে আঙ্গুলে কলমের মধ্যে থাকা সুই দিয়ে ফোঁড়া করার সময় মিসিং হয়ে গেলে প্রতিবার ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গুল ব্যবহার।
- একবার কোনো স্ট্রিপ অথবা শুই ব্যবহার করলে দ্বিতীয়বার আর ওই জিনিসগুলো ব্যবহার করা যাবে না। নির্দিষ্ট কোন ময়লা আবর্জনা ফালানোর ঝুড়িতে রাখতে হবে।
ডায়াবেটিস মাপার মেশিন কোনটি ভালো
বর্তমান সময়ে আধুনিক বিভিন্ন কোম্পানির ডাইবেটিস মাপার মেশিন তৈরি হয়েছে। অনেকগুলো কোম্পানির গ্লুকোমিটার রয়েছে। একটু ভালো মানে ডায়াবেটিক মাপার যন্ত্র কিনলে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়। কারণ ভালো জিনিস সব সময় দাম একটু বেশি হয়। ডিজিটাল প্রেসার মাপার যন্ত্র গুলো অনেকটাই উন্নত।
ডিজিটাল ডায়বেটিস মাপার মেশিনের দাম কত
বর্তমান সময়ে অনেক কোম্পানি থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ডায়াবেটিস মিটার তৈরি করেছে। ডিজিটাল মিটারের মাধ্যমে খুব সূক্ষ্মভাবে এবং সঠিক ডাইবেটিস এর ফলাফল পাওয়া যায়। আধুনিক প্রযুক্তির তৈরি এই ডিজিটাল ডায়াবেটিস মাপার মেশিনের দাম অনেকটাই বেশি। বর্তমান ডিজিটাল পদ্ধতি ডায়াবেটিস মিটার কিনতে চাইলে আপনার খরচ হবে ৬ হাজার টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত। এবং কিছু কিছু সময় কোম্পানির ডিসকাউন্ট এবং মেলায় থেকে কিনলে একটু কম টাকার মাধ্যমে কিনতে পারবেন।
ডায়াবেটিস মাপার কিট
গ্লুকোমিটার মধ্যে কিট দিয়ে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে হবে। কারণ কীটের মধ্যে আপনার এক ফোটা রক্ত দিয়ে মেশিনে প্রবেশ করলেই আপনার ডাইবেটিস ফলাফল চলে আসবে। কিছু মানুষ আছে এটাকে স্ট্রিপ বলে থাকে আবার কিছু লোক এটা কিট বলে। আপনি আমাদের সম্পর্ক লেখাটির মাধ্যমে ডায়াবেটিস মাপার কিট এর দাম সম্পর্কে আইডিয়া নিতে পারবেন।
ডায়াবেটিস মেশিন কোথায় পাওয়া যায়
বাংলাদেশের বিভিন্ন বড় ফার্মাসিউটিক্যাল দোকানে এটা ডায়াবেটিস মেশিন পাওয়া যায়। আপনি ডায়াবেটিস মেশিনের সাথে স্ট্রিপ সহ কিনে আনতে পারবেন। ইতিমধ্যেই আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ডায়াবেটিকস মেশিনের দাম উল্লেখ করে দিয়েছি। এর দাম গুলো দেখে আপনারা বাজারের ফার্মাসিটিক্যাল দোকান থেকে ডাইবেটিক্স মেশিন সংগ্রহ করতে পারবেন।
ডায়বেটিস মাপার হিসাব
কিছু মানুষ আছে ডায়াবেটিস মাপার পর কত পয়েন্ট উঠলে আপনার ডায়াবেটিস আছে অথবা সর্বনিম্ন কত পয়েন্ট থাকলে আপনার শরীরে ডায়াবেটিস নাই এই সব তথ্য জানার চেষ্টা করে। ডায়াবেটিস মাপতে হলে আপনার দুটি পদ্ধতি খেয়াল রাখতে হবে। আপনি যদি খালি পেটে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করেন তাহলে সাত পয়েন্টের উপরে গেলে আপনার ডায়াবেটিস আছে। ৬.৫ থেকে ৭ পয়েন্ট এর মধ্যে হলে আপনার ডায়াবেটিস স্বাভাবিক। এবং দ্বিতীয়তঃ আপনি যদি ভরা পেটে ডাইবেটিক পরীক্ষা করেন অথবা খাওয়ার দুই ঘন্টা পরেও যদি ডায়াবেটিস পরীক্ষা করেন তাহলে ১১.১ এর বেশি হলে আপনার ডায়াবেটিস আছে। এই দুইটা দিক খেয়াল রাখতে হবে।
শেষ কথা
আপনারা যারা ডায়াবেটিস রোগে ভুগতেছেন। অথবা শরীরে সুগার ঠিক আছে কিনা চেক করার কথা ভাবতেছেন। অনেকেই ডায়াবেটিস চেক করার জন্য মেশিন কিনতে চায়। ইতিমধ্যেই আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে কয়েক ধরনের ডায়াবেটিস মেশিনের দাম উল্লেখ করে দিয়েছি। আশা করি, আপনি আমাদের সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে ডায়াবেটিস মাপার মেশিনের দাম কত জানতে পেরেছেন। এরকম আরো বিভিন্ন তথ্য জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ